স্পোর্টস ডেস্ক: সাউথ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা জয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয় পাকিস্তানের। আজ শনিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জিতে সেমিফাইনালের দৌড়ে আরও এগিয়ে গেলেন সরফরাজরা। পাকিস্তানের এই জয়ে টাইগারদের সেমিফাইনালের রাস্তা আরও কঠিন হয়ে গেল।
শেষ চারে যেতে হলে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না পাকিস্তানের। গুরত্বপূর্ণ এই ম্যাচে আফগানিস্তানকে কম রানের মধ্যে (২২৭) বেঁধেও ফেলে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত তিন উইকেটে জিতে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের চারে ওঠেন সরফরাজরা।
আট ম্যাচে চার জয়ে পাকিস্তানের পয়েন্ট নয়। পয়েন্ট টেবিলে চার নম্বরে অবস্থান করছে দলটি। সাত ম্যাচে চার জয়ে আট পয়েন্ট নিয়ে তার পরেই অবস্থান করছে ইংল্যান্ড। সাত ম্যাচে তিন জয়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
২২৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাকিস্তান একপেশে ম্যাচ জিততে পারেনি। একসময় ৩০ বলে ৪৬ রানের প্রয়োজন ছিল সরফরাজদের। হাতে ছিল মাত্র চার উইকেট। এমন সময়ে বোলিংয়ে আসেন আফগান অধিনায়ক। তার এক ওভারে ইমাদ ওয়াসিম তিনটি চার মেরে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন পাক ব্যাটসম্যান ইমাদ ওয়াসিম। এখানেই মূলত ফিকে হয়ে যায় আফগানদের জয়ের স্বপ্ন।
পাকিস্তানে জয়ের কৃতিত্ব পুরোটাই পাবেন ইমাদ ওয়াসিম। তার ৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংসেই সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকে ৯২ সালের চ্যাম্পিয়নরা। সাত নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে ইমাদই খেলেন সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ওহাব রিয়াজ ৯ বলে ১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ইমাদের কাজ আরও সহজ করে দেন। শেষ পর্যন্ত দুই বল হাতে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
আজ একেবারে খালি হাতে ফেরেন ফাখহার জামান। ইমাম ৩৬ ও বাবর ৪৫ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। এই দুজন তাদের ইনিংস লম্বা করতে পারলে জয় আরও সহজে পেত পাকিস্তান। এ ছাড়া হারিস সোহাইল ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
আফগানদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ নবী ও মুজিবুর রহমান। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে আফগানরা। ২৭ থেকে ৫৭ রানের মধ্যে আফগানরা হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। তবে সেই ধাক্কা সামলে উঠলেও বেশিদূর এগোতে পারেনি। শাহেন শাহ আফ্রিদির বোলিং তোপে হাসেনি আফগানদের ব্যাট। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ওভার শেষে ২২৭ রান করে দলটি।
বিশ্বকাপের মঞ্চে কিশোর বোলার হিসেবে এই প্রথম চার উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন আফ্রিদি। তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। আফ্রিদি ১০ ওভার বোলিং করে ৪৭ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়েছেন। এর আগের ম্যাচেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছেন দুর্দান্ত। তিন উইকেট নিয়ে ভেঙে দেন প্রোটিয়াদের টপ অর্ডার।
আফগানিস্তান শুরুতেই টপঅর্ডারদের হারানোর ধাক্কা সামলে আসগর-ইকরামের ব্যাটে। দুজনের ৬৪ রানের জুটিতে ১৮ ওভার এক বলে ১০০ রানের ঘর পেরোয় আফগানিস্তান। সর্বোচ্চ ৪২ রান করে আউট হন দুই আফগান ব্যাটসম্যান আসগর ও নাজিবুল্লাহ। ইকরাম ৪২ ও রহমত শাহ ৩৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার রহমত শাহ। এ ছাড়া ১৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নবি। সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ১৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
আফ্রিদির রেকর্ডের দিনে মোহাম্মদ আমির কোনো উইকেটের দেখা পাননি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম ও ওহাব রিয়াজ।